বাংলাদেশের ট্রেন সিট প্রকারভেদ, মান ও ধরন জেনে নিন
শোভন
এই বিভাগের ক্লাসের পুরো নাম শোভন (Shovan)। শোভন ক্লাসের চেয়ার সিট নন এসি। দেশের সকল মেইল ট্রেন ও কিছু আন্তঃনগর ট্রেনে শোভন সিট রয়েছে। ট্রেনের সবচেয়ে কম খরচের সিট শোভন। কম দামী সিট হওয়ায় এই সিটে ভ্রমণ করাও আরামদায়ক নয়। যাদের বাজেট অল্প তারা এই সিটের টিকেট কেটে ভ্রমণ করতে পারেন।
শোভন চেয়ার
এই সিটের পুরো নাম শোভন চেয়ার (Shovan Chair)। আন্তঃনগর ট্রেনে নন এসি এই সেকেন্ড ক্লাস শোভন চেয়ার সিট সংখায় বেশি থাকে। শোভন চেয়ারের ভাড়া শোভন সিটের চেয়ে বেশী। এই সিট মোটামুটি আরামদায়ক। শোভন থেকে শোভন চেয়ার সিট এর মান ভালো হয়ে থাকে। এই সিট অনেকটা বাসের সিটের মতো। যাদের বাজেট মিড লেভেলের তারা এই সিটের টিকেট কেটে ভ্রমণ করতে পারেন।
স্নিগ্ধা
এটির পুরো নাম স্নিগ্ধা (Snigdha)। এই ক্লাসের সিট এসি চেয়ার (AC Chair) হিসেবেও পরিচিত। এটির আসন শোভন চেয়ারের মতোই তবে পার্থক্য হলো এই বগিতে এসি থাকে। দেশের বেশিরভাগ জনপ্রিয় গন্তব্যের ট্রেনে স্নিগ্ধা কোচ থাকে। এই সীট শোভন চেয়ারের চেয়ে আরামদায়ক। পুরো কোচ এসি থাকায় গরমের দিনে ভ্রমণও আরামদায়ক। এটির ভাড়া শোভন চেয়ারের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে।
ফার্স্ট ক্লাস চেয়ার
এটির পুরো নাম ফার্স্ট ক্লাস চেয়ার (First Class Chair)। বাংলাদেশে ট্রেনের ফাস্ট ক্লাস চেয়ার কোচ আরামদায়ক ও উন্নত সেবা প্রদান করে। এসব কোচে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ, গদি দেওয়া প্রশস্ত আসন এবং পায়ের বিশ্রামের সুবিধা রয়েছে। যাত্রীরা ব্যক্তিগত স্থান ও আরামদায়ক ভ্রমণের সুযোগ পান। আসনগুলোর সাথে ভাঁজযোগ্য টেবিল এবং পরিচ্ছন্ন টয়লেটের সুবিধাও থাকে। সব আন্তঃনগর ট্রেনে এই টাইপ থাকেনা।
ফার্স্ট ক্লাস বার্থ
এই ক্লাসের পুরো নাম ফার্স্ট ক্লাস বার্থ (First Class Berth)। বাংলাদেশে ট্রেনের ফাস্ট ক্লাস বার্থ আরামদায়ক ও ব্যক্তিগত ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত। এই কোচে যাত্রীদের জন্য শোবার উপযোগী গদি দেওয়া বার্থ বা খাটের ব্যবস্থা থাকে। প্রতিটি বার্থের সাথে পর্দা বা দরজা দেওয়া হয়, যা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিশ্চিত করে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ (এসি) সুবিধাসহ এই কোচগুলোতে আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ রয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বিছানা, বালিশ, এবং চাদরের ব্যবস্থা রয়েছে।
ফার্স্ট ক্লাস সিট
এটির পুরো নাম ফার্স্ট ক্লাস সিট (First Class Seat)। দিনে চলাচলে করা ট্রেনে নন এসি কেবিন গুলো এই সিট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এখানে ঘুমানোর কোনো সুযোগ নেই, এই সিটে বসে যেতে হবে। মূলত F_BERTH কেবিন গুলোই দিনের বেলা F_SEAT সিট নামে চলাচল করে। এই সিটে ভ্রমণ করাও অনেকটা আরামদায়ক।
এসি বার্থ
এটির পুরো নাম এসি বার্থ (AC Berth)। এয়ার কন্ডিশনড কেবিন। শুধু রাতের ট্রেনে এই ক্লাস পাওয়া যায়। ২ অথবা ৪ সিটের কেবিন হয়ে থাকে। বাংলাদেশের দূরপাল্লার আন্তঃনগর রাতের ট্রেনে এই কেবিন থাকে। বাংলাদেশের ট্রেন গুলোর মধ্যে সবচেয়ে আরামদায়ক ও বেশী খরচের সিট।
এসি সিট
এটির পুরো নাম এসি সিট (AC Seat)। এয়ার কন্ডিশনড সিট। মূলত এসি বার্থ (AC_B) কেবিন গুলো দিনের বেলার যাত্রার সময় এসি সিট হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ট্রেন টিকেট কেনার টিপস
দুরপাল্লায় ট্রেন ভ্রমণের জন্যে শোভন এর টিকেট না কেনাই ভালো। সিট গুলো আরামদায়ক না হওয়ায় দূরের যাত্রাপথ আপনার জন্যে কষ্টকর হয়ে যাবে। তার উপর শোভন কোচে স্ট্যান্ডিং মানুষ বেশী থাকে এবং পরিবেশ তেমন ভাল হয়না।
যদি কম খরচ ও একটু আরামদায়ক সিটে ট্রেন ভ্রমণ করতে চান তাহলে শোভন চেয়ার (নন এসি) সিট সবচেয়ে ভালো হবে। খরচ ও কম হবে এবং সিটে বসে আরাম ও পাবেন। আপনি যদি কম খরচে এসি কোচে ভ্রমণ করতে চান সেক্ষেত্রে স্নিগ্ধা সবচেয়ে ভালো।
আরও পড়ুনঃ কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী ও ভাড়ার তালিকা।
রাতের বেলায় কেবিন গুলো দিনের বেলায় সিট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু কেবিনে বসে যাওয়াটা একটু কষ্টকর। সেই হিসেবে দিনের বেলা নন এসি ফার্স্ট ক্লাস সিট (F_SEAT) বা এসি সিট (AC_S) এ না গিয়ে শোভন চেয়ার বা স্নিগ্ধাতে ভ্রমণ আরামদায়ক হবে। যদি পরিবার নিয়ে ভ্রমণ করেন এবং প্রাইভেসি চান তাহলে দিন বা রাত কেবিন পুরোটা বুক করলে ভালো হবে।