শীত শুরু হতেই আমাদের ত্বকে মলিনতা দেখা দিতে শুরু করে। বাইরের শুষ্ক পরিবেশের সাথে তাল মিলিয়ে ত্বকও প্রাণহীন শুষ্ক হতে শুরু করে। শীতের এই শুষ্কতার প্রথম ছাপ এসে পরে আমাদের কোমল ত্বকের উপর। এতে করে ত্বক ফাটা, র্যাশ, ব্রণেসহ আরও বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে আমাদের ত্বক। শীতে বিশেষ করে মুখের ত্বকে ভীষণ ভাবে রুক্ষতা দেখা দেয় তাই এই সময় মুখের ত্বকের জন্য বাড়তি যত্নের প্রয়োজন রয়েছে। এই সমস্যার সমাধানের জন্য অল্প কিছু ঘরোয়া উপাদান আপনার জন্য আশীর্বাদ রুপে কাজ করতে পারে। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক শীতকালে ত্বকের যত্ন কি কি উপায়ে করা যেতে পারে_
নিয়মিত ময়েশ্চারাইজীং
শীতে ত্বকের শুষ্কতা কমাতে ও ত্বক সজীব রাখতে জন্য শীতে অবশ্যই নিয়মিত স্কিনে ময়েশ্চারাইজার ইউজ করতে হবে। আমরা ময়েশ্চারাইজারের নাম শুনলেই আমাদের চোখে ভাসে নামিদামি ব্র্যান্ডের ময়েশ্চারাইজার গুলো কিন্তু আপনি হয়তো জানেন না এর বাইরেও খুব কম খরচে আপনি আপনার ত্বককে খুব ভালো ময়েশ্চারাইজ দিতে পারবেন আপনার ঘরে থাকা নারিকেল তেল ব্যবহার করে। প্রতিদিন গোসলের পরে ত্বকে নারিকেল তেল ব্যবহার করলে ত্বক থেকে রুক্ষতা দূর হয়ে যায়, সেই সাথে ত্বকের কোমলতাও অনেকটা বাড়বে। তবে মাথায় ব্যাবহার করা নারকেল তেলের থেকে অর্গানিক নারকেল তেল ব্যবহার করাটা বেশি ভালো হবে। মোট কথা ত্বকে ব্যবহারের নারিকেল তেল যেন খাঁটি হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
কফি ও চিনি দিয়ে ত্বক পরিচর্যা
চিনি আমাদের ত্বকের জন্য খুব ভালো এক্সফলিয়েট হিসেবে কাজ করে। শীতকেলে আমাদের অনেকের ত্বকে মরা চামড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই ক্ষেত্রে চিনি খুব ভালো কাজে দেয়। এছাড়াও শীতে ত্বক তার আসল ব্রাইটনেস হারায় যার দরুন ত্বক নিষ্প্রাণ দেখায় এই সমস্যার সমাধান দিতে পারে কফি। কফি ও চিনি একসাথে নিয়ে সামান্য পানি বা দুধ মিশিয়ে হালকা হাতে ৫ মিনিট স্কার্ব করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে দু’বার করতে পারেন।
হালকা গরম পানিতে গোসল
শীতের দিন এলেই আমরা গোসল করা নিয়ে খুব আলসেমি করে থাকি, এমন অনেকেই আছে সপ্তাহের পর সপ্তাহ গোসল না করেই কাটিয়ে দেন। কিন্ত এই গোসলই আপনার শরীর সুস্থ রাখার জন্য প্রধান ভূমিকা পালন করে। তবে হ্যাঁ শীতের এই কনকনে ঠান্ডায় গোসলের সময়ে হালকা গরম পানি ব্যবহার করতে হবে এতে করে শরীরে থাকা ময়লা গুলো সহজেই উঠে আসবে। তাছাড়াও শীতের দিনে ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে আপনার ত্বক আরও বেশি রুক্ষ, শুষ্ক ও মলিন হয়ে যাবে। এছাড়াও বিজ্ঞানীদের গবেষণা মোতাবেক শীতের দিনে একদিন পর পর গোসল করলে ত্বকের ময়েশ্চার লেভেল ঠিক থাকে বলে দাবী করা হয়।
পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ
শীতকালে পানির চাহিদা বেশি থাকলেও আলসেমি করে পানি পান করা থেকে সবাই বেশ দূরেই থাকে। শীতের কারণে সারাদিনে ৩ গ্লাস পানিও কেউ খেতে চাননা। তবে আপনি কি জানেন এই শীতে ভেতর থেকে আদ্রতা ধরে রাখতে সবচেয়ে বেশী ভূমিকা রাখে পানি? আমাদের উচিত শীতের সময়েও অন্যান্য সময়ের মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করার অভ্যাস ধরে রাখা। শীত করবে ভেবে কম পানি পান করে দিন কাটিয়ে দেওয়ার কথা ভাবলে সবচেয়ে ক্ষতির মুখে আপনিই পরবেন। পানি কম পান করার ফলে শরীরের ভেতর ও বাইরে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। তাই এসময় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পানের দিকে মনযোগী হতে হবে। শরীরে পানির ঘাটতি হলে ত্বকও এর প্রভাব পড়বে ফলে ত্বক রুক্ষ হয়ে যাবে। তাই ত্বকের আর্দ্রতা ভেতর থেকে ধরে রাখতে দিনে অন্তত তিন লিটার পরিমাণ পানি পান করুন।
হিউমিডিফায়ার দিয়ে ত্বক পরিচর্যা
ত্বক ভালো রাখার জন্য ও ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে এই শীতে ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন। শীতকালে এবং গরমে এসি রুমে এই হিউমিডিফায়ার খুব ভালো আদ্রতা বজায় রাখে ফলে আমাদের ত্বকের ময়েশ্চার লেভেল ঠিক থাকে। যদি পারেন এই পদ্ধতি ব্যবহার করেও ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে পারেন। শীতকালে ত্বকের যত্ন ভালো থাকুন, ধন্যবাদ।
আরও পড়ুনঃ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ১৪ টি অনলাইনে ইনকাম করার সহজ উপায়।
শীতকালে ত্বকের যত্ন সম্পর্কিত পোস্ট টি পড়ার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ। শিতকালে আমাদের দেশে অনেক ঠান্ডা অনুভব হয় বলে আমাদের ত্বকের দিকে লক্ষ্য রাখা অতিব জরুরী। উপরে উলেক্ষিত বিষয়গুলো ছাড়াও আপনার ত্বকের অধিক পরিচর্যা প্রয়োজন। শীতকালে ত্বকে যদি অধিক সমস্যায় ভুগেন সেক্ষেত্রে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।