সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? কিভাবে করবেন? এর ভালো ও মন্দ দিক
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হলো সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্মগুলি ব্যবহার করে কোনও প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসার পণ্য বা সেবা প্রচার করার উপায়। এটি একটি ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি যা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি ব্যবহার করে লক্ষ্য পৌঁছাতে সাহায্য করে। এটি সামাজিক যোগাযোগ (ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, লিঙ্কডইন, ইউটিউব, টিকটক, স্ন্যাপচ্যাট, ইত্যাদির) মাধ্যমে কাস্টমারদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলা, প্রতিষ্ঠানের সেবা বা পণ্যগুলি প্রচার করা, নিজের ব্র্যান্ডিং নিজে করা এবং গ্রাহকদের সাথে সম্প্রচারিত বাণিজ্যিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা সহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং- এর সাথে ব্যবসার স্মার্ট লক্ষ্য সেট করা হয়। মার্কেটিং প্ল্যান তৈরি করা হয়। আর্থিক সম্প্রচার বাড়ানো হয় এবং, গ্রাহকদের আগ্রহ বাড়ানো হয়। যাতে তারা প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা সম্পর্কে বেশি জানতে এবং কিনতে ইচ্ছুক হয়।
এটিকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন:
- সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টিং: প্রতিষ্ঠানটির নিজের একটা পেজ বা প্রোফাইল থাকবে যেখানে পোস্ট করে পণ্য সম্পর্কে তথ্য, ছবি, ভিডিও, এবং অন্যান্য বিষয়গুলি শেয়ার করতে হবে।
- এডভারটাইজিং: সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির এডভারটাইজিং টুল ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে লক্ষ্য অনুযায়ি এড তৈরি করে তা সোশ্যাল মিডিয়ার টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এটি গ্রাহকদের উৎসাহিত করে পণ্য কেনার দিকে।
- কন্টেন্ট মার্কেটিং: প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নিজেদের পণ্যের গুণগত সম্পর্কে কন্টেন্ট শেয়ার করার মাধ্যমেও ব্যবসায়ের সম্প্রচার করা সম্ভব।
- প্রতিক্রিয়া: প্রতিষ্ঠান সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে গ্রাহকদের প্রশ্ন উত্তর দিতে হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রয়োজন রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের সাথে সামাজিক যোগাযোগ তৈরি করতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং-এর গুরুত্ব অপরিসীম।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং-এর ভালো দিকঃ
এর অনেক ভালো দিক আছে, যা ব্যবসার সম্প্রচার করতে সাহায্য করে। গ্রাহকদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করে। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং-এর ভালো দিকগুলো নিম্নলিখিত:
- গ্রাহকের সাথে ভালো সম্পর্ক: সোশ্যাল মিডিয়ার মার্কেটিং ব্যবসাইদের সাথে গ্রাহকদের ভালো সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে। এতে করে গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যের মাধ্যমে আপনার ব্যবসার উন্নতি সম্ভব।
- গ্রাহকের ডেটা সংগ্রহ: সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্মগুলি আপনাকে গ্রাহকের ডেটা সংগ্রহ করতে সাহায্য করে। এতে করে আপনার ব্যবসার লক্ষ্য ও মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি তৈরি করতে সহজ হবে।
- ব্র্যান্ড প্রচার: সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্র্যান্ড প্রচার করতে সাহায্য করে। গ্রাহকরা সোশ্যাল মিডিয়া পেজ পোস্টের মাধ্যমে ব্র্যান্ড সম্পর্কে জানতে পারে এবং তাদের মূল্যবান মন্তব্য দিয়ে কাজে অংশ নেওয়া নেয়।
- লক্ষ্যমূলক মার্কেটিং: সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি মূল লক্ষ্য অনুযায়ী কাস্টমার বাছাই করতে সাহায্য করে। এতে করে সঠিক কাস্টমারের সামনে সঠিক প্রডাক্ট পৌঁছে যায় এতে করে ব্যবসা সহজে সফল হয়।
- অনুগ্রহশীল গ্রাহকের মন্তব্য: সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি ব্র্যান্ড এবং পণ্যের উপর গ্রাহকের মন্তব্য ও প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করতে সাহায্য করে।
- ট্রাস্ট তৈরি: সোশ্যাল মিডিয়া সাহায্য করে প্রতিষ্ঠানের উপর ট্রাস্ট তৈরি করতে। এটি গ্রাহকদের ব্র্যান্ড এবং পণ্যের উপর বিশ্বাস যোগাতে করতে সাহায্য করে।
- ফিডব্যাক এবং সংশোধন: সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি গ্রাহকের ফিডব্যাক সংগ্রহ করতে সাহায্য করে।যদি কখনও কোনো ত্রুটি হয় তা সহজেই সমাধান করা সম্ভব হয়।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং-এর খারাপ দিকঃ
প্রত্যেক মাধ্যমের ভালো ও মন্দ দিক রয়েছে তেমন ভাবেই সামাজিক মাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলির কিছু খারাপ দিক আছে, যেমনঃ
- সুরক্ষা সমস্যা: সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি সমাজের বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করে রাখে। এই তথ্যগুলির মাধ্যমে ব্যবসায়িগণ গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ করে থাকে। এই তথ্যগুলির মাধ্যমে গ্রাহক বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।
- ভুয়া তথ্য: সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে পণ্য সম্পর্কে অনেকেই ভুয়া তথ্য দিয়ে পণ্যের মান নষ্ট করতে চায়। এছাড়াও অনেক গ্রাহক ভুয়া তথ্য দিয়ে পণ্য অর্ডার করে ব্যবসায়িদের হেনস্তা করে।
- প্রতারণা: সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি সমাজের শাস্তির কারণ হতে পারে। তাদের অসাধারন এডিট করা ছবির সাথে বাস্তবের পণ্যের কোনো মিল থাকেনা ফলে ক্রেতা প্রতারিত হয়।
- প্রশাসনিক সমস্যা: সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি কি আসল পণ্য বিক্রি করছে নাকি নকল তা চেনার উপায় নাই। ফলে প্রতারিত হলেও প্রশাসনের হাত থেকে প্রতারকরা বেঁচে যায়।
আরও পড়ুনঃ ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে করবো?
One Comment